পেট ফাঁপা বা বদহজম: কারন, লক্ষন, চিকিৎসা ও পরামর্শ

পেট ফাঁপা এবং বদহজম শুধু একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি অনেক ক্ষেত্রেই অন্ত্রের খারাপ স্বাস্থ্যের ইংগিত দেয়। এটি যদি মাঝে মাঝে হয়, তাহলে তেমন উদ্বেগের.
Admin
পেট ফাঁপা এবং বদহজমের কারন, লক্ষন, চিকিৎসা ও পরামর্শ

পেট ফাঁপা, সাধারণত 'ফার্টিং' নামে পরিচিত, এটা শুধু গ্যাসের সমস্যা নয়, এর সঙ্গে থাকতে পারে ঢেকুর ওঠা, পেটে ব্যথা, বমিভাব, এমনকি পাতলা পায়খানাও। গ্যাস স্বাভাবিক হজম প্রক্রিয়ার অংশ, কিন্তু যখন এটি অতিরিক্ত হয়ে যায়, তখন তা অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে এবং দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

পেট ফাঁপা এবং বদহজম (Flatulence and indigestion) শুধু একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি অনেক ক্ষেত্রেই অন্ত্রের খারাপ স্বাস্থ্যের ইংগিত দেয়। এটি যদি মাঝে মাঝে হয়, তাহলে তেমন উদ্বেগের কারণ নেই। তবে যদি এটি নিয়মিত হয়, তাহলে এর কারণ খুঁজে বের করা জরুরি।

পেট ফাঁপা এবং বদহজম এর কারন ও লক্ষন

  1. আমাশয়, ডায়রিয়া বা বদহজম জনিত কারণে পেট ফুলা দিয়ে উঠে এবং ভুটভাট করে।
  2. পুরানো আমাশয়ের জন্য ঠিকমত হজম না হইলে পেট ফাঁপে।
  3. পেট ফুলিয়া উঠে, এবং রোগী অস্বস্তি বোধ করে।
  4. পেট ভার বোধ হয়, রোগীর ক্ষুধা কমিয়া যায়, রুচি থাকে না।
  5. ঢেকুর হয়।
  6. পেটে বায়ু সঞ্চারের ফলে অনেক সময় বায়ু উপরের দিকে উঠিলে বুক ধড়পড় করা, হার্টের অসুবিধা প্রভৃতি হইতে পারে।
  7. অনেক সময় বার বার মলত্যাগের ইচ্ছা হয়, কিন্তু পায়খানা পরিষ্কার হয় না।

পেট ফাঁপা এবং বদহজম এর চিকিৎসা

  1. বদহজমের জন্য পেট ফাঁপা হইলে বা ক্ষুধাহীনতা হইলে হজমের জন্য Pancreatin জাতীয় ঔষধ,
  2. পাতলা পায়খানা থাকলে Imotil দিতে হবে।
  3. আমাশয় ভাব থাকিলে Metronidazol জাতীয় ঔষধ,
  4. ঢেকুর, পেটফাঁপা, পেটফোলা, বুক জ্বালা, পেট ভার বোধ ইত্যাদিতে Domperidon জাতীয় ঔষধ,
  5. গত ৬ মাসের মধ্যে কৃমির ঔষধ না খেয়ে থাকলে Alben অথবা, Solas ঔষধ দিতে হবে।
  6. গ্যাসের ঔষধ Entacyd plus অথবা, Esomiprazol Mups ইত্যাদি ঔষধ খাইেত দিতে হবে।
  7. কোষ্ঠ কাঠিন্য থাকলে Avolac Syp অথবা, Easylife Tab/Syp.
  8. পেটে ব্যথা থাকলে Viset অথবা, Algin. 

পেট ফাঁপা ও বদহজম কমানোর ঘরোয়া সমাধান

সাধারণভাবে, এই সমস্যাগুলো সাময়িকভাবে ওষুধ বা অ্যান্টাসিড দিয়ে কমানো গেলেও, গ্যাস্ট্রোলজি বিশেষজ্ঞদের নিচের উল্লেখিত পরামর্শ দিয়ে থাকেন:

  1. খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন: কীভাবে খাবেন ও কী খাবেন নিয়ন্ত্রন করুন, বেশি খাওয়ার পরিবর্তে অল্প পরিমাণে বারবার খান, এতে হজম সহজ হয়।
  2. ধীরে ও চিবিয়ে খাওয়া – এটি পরিপাক প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে ও অন্ত্রে বাতাস ঢোকা কমায়। যেসব খাবার আপনাকে বেশি গ্যাস দেয়, সেগুলো চিহ্নিত করুন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী কমান।
  3. প্রোবায়োটিক গ্রহণ– দই, কেফির, বা প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়িয়ে হজমে সাহায্য করতে পারে।
  4. আঁশযুক্ত খাবার – হঠাৎ বেশি ফাইবারযুক্ত খবার খেলে অন্ত্র হজমে সময় নেয় এবং পেট ফাঁপতে পারে, তায় অল্প করে ধীরে ধীরে খাবারের পরিমান বাড়াতে হবে।
  5. পানি পান – পর্যাপ্ত পানি পান করলে অন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত হয় ও কোষ্ঠকাঠিন্য কমে।
  6. খাওয়ার পর হাঁটাহাঁটি – এতে অন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ে ও গ্যাস আটকে থাকার প্রবণতা কমে।
  7. শারীরিক পরিশ্রম এবং নিয়মিত ব্যায়াম অন্ত্রের স্বাভাবিক গতি ঠিক রাখে।
  8. মেডিটেশন বা রিলাক্সেশন টেকনিক অন্ত্রের কার্যক্রমকে স্বাভাবিক করতে পারে।
  9. জিরা ফুটিয়ে পানি পান করলে গ্যাসের সমস্যা কমতে পারে।
  10. আদা দিয়ে চা: আদা গ্যাস কমায় ও হজমে সহায়ক।
  11. হালকা গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে পান করলে অ্যাসিডিটি কমে ও হজম ভালো হয়।
সতর্কতা! ইহা একটি নমুনা চিকিৎসা মাত্র, সকল প্রকার ঔষধের ডোজ (খাবারের নিয়ম) রোগির শরীরের গঠন, বয়স, ওজনে এবং রোগের অবস্থার ওপরে নির্ভর করে দেয়া হয়, তায় সেবনের পূর্বে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

Post a Comment