বসন্ত রোগ: এর কারন, লক্ষন ও চিকিৎসা

বসন্ত রোগ: এর প্রকার, কারন, লক্ষন, চিকিৎসা ও পরামর্শ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে
Admin
বসন্ত রোগ: এর প্রকার, কারন, লক্ষন, চিকিৎসা ও পরামর্শ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে

বসন্ত রোগ বলতে প্রধানত দুটি রোগ বোঝানো হয়: গুটিবসন্ত (Smallpox) এবং জলবসন্ত (Chickenpox)। গুটিবসন্ত একটি মারাত্মক, ভ্যারিওলা ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট রোগ যা বিশ্ব থেকে নির্মূল করা হয়েছে, কিন্তু জলবসন্ত (ভ্যারিসেলা-জুস্টার ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট) এখনও বিদ্যমান এবং তুলনামূলকভাবে কম মারাত্মক। উভয়ই ছোঁয়াচে রোগ এবং এদের প্রতিরোধে টিকা গুরুত্বপূর্ণ।

সংক্রামক ব্যাধিগুলির মধ্যে বসন্ত খুবই মারাত্মক! যা অতি সহজে বিস্তার লাভ করে। অনেক সময় ইহা মহামারী আকারে হইয়া থাকে। বাতাসের মাধ্যমে ইহা ছড়াইয়া পড়ে। আবার মাছির মাধ্যমেও ইহা ছড়াইয়া পড়ে। ছোঁয়াচ লাগিবার পক্ষকালের মধ্যেই একজন সুস্থ ব্যক্তি আক্রান্ত হইয়া পড়ে।

বসন্তরোগ নির্ণয়

সামান্য জ্বরের সহিত শ্রেষ্মা, সর্ব শরীরে ব্যথা এবং পরে গুটি দেখা দেয়। গুটিগুলি প্রথমে বুকে ও পিঠে বাহির হয় এবং পরে ধীরে ধীরে হাতে, পায়ে ও মুখমুন্ডলে বিস্তার লাভ করে। ৩/৪ দিন পরে গুটিগুলি ঝাঁকে ঝাঁকে বাহির হয় এবং গুটির মধ্যে পানি জন্মে। জাত বসন্ত ও পানি বসন্তের পার্থক্য:

গুটিবসন্ত (Smallpox) জলবসন্ত (Chickenpox)
১। ৩/৪ দিন জ্বরের পর গুটিগুলি বাহির হয়। ১। সামান্য জ্বরের সঙ্গে দেখা যায়।
২। সব গুটিকা এক সঙ্গে বাহির হয়। ২। গুটিগুলি ৩/৪ দিন পর্যন্ত ঝাঁকে ঝাঁকে বাহির হয়।
৩। গুটিগুলি মুখমন্ডল ও বাহুতে বেশী বাহির হয়। ৩। গুটিগুলি প্রথমে বুকে ও পিঠে এবং পরে মুখে বাহির হয়।
৪। গুটিগুলি শক্ত দানার মত হয়। ৪। গুটিগুলি নরম হয় এবং উহা পানিতে ভরা থাকে।
৫। গুটি শুকাইলে মধ্যে টোল পড়ে এবং সহজে মিশে না। ৫। গুটি শুকাইলে মধ্যে কোন টোল পড়ে না এবং গায়ে দাগ বেশী দিন থাকে না।
৬। একটি মারাত্মক রোগ। ৬। তত মারাত্মক নয়
৭। আরোগ্য হইতে বেশী সময় লাগে ৭। দ্রুত আরোগ্য হয়

বসন্ত রোগের লক্ষন?

  1. জ্বরের তাপমাত্রা সাধারনত ১০০° ডিগ্রীর উপরে হয় না। তবে কখনো কখনো শরীরের তাপমাত্রা ১০৩/১০৪° ডিগ্রী পর্যন্ত হয়।
  2. জ্বর আসার সময় কম হয়, কিন্তু জ্বর সহজে ছাড়িতে চায় না।
  3. গা. হাত ও পা ভীষণ ব্যথা করে।
  4. ২/৩ দিন পর সারা শরীরে বসন্ত বাহির হয়।

রোগের চিকিৎসা?

  1. জ্বর ও ব্যথার জন্য Paracetamol জাতীয় ঔষধ - Napa, Ace, Renova, Xpa ইত্যাদি।
  2. চুলকানির জন্য - Antihistamine ঔষধ - Alcet, Deslor, Oradin, Fexo ইত্যাদি।
  3. ইনফেকশন এড়াতে এন্টিবায়োটিক - Flucloxacilin জাতীয় ঔষধ - Fluclox, Flucloxin, Phylophen, Fluster ইত্যাদি।
  4. অথবা, Cefixime জাতীয় ঔষধ - Cef 3, Cefim 3, Denver ইত্যাদি।
  5. অথবা, Cefuroxime জাতীয় ঔষধ - Cefotil ইত্যাদি।
  6. গুটিগুটিতে লাগানোর জন্য - Calamine Loution (কটন বাডে লাগিয়ে গুটির মাথায় লাগবেন) অথবা, Nebanol Powder দেয়া যেতে পারে।
  7. ২/৩ দিনে কোন উন্নতি না বুঝলে Acyclovir জাতীয় ঔষধ - Virux ইত্যাদি  দেয়া যেতে পারে।

উপদেশ

  1. রোগীকে বিশেষ সাবধানে রাখিতে হইবে, যাহাতে গুটি এবং খোসা উঠার সময় তাহা ছড়াইয়া না পড়ে।
  2. রোগীকে সব সময় মশারীর মধ্যে রাখা ভাল।
  3. পানিতে Detol বা Sevlone দিয়ে গোছল করিতে হবে, কোনভাবেই গুটির উপরে ঘষামাজা করে গোছল দেয়া যাবেনা।
সতর্কতা! ইহা একটি নমুনা চিকিৎসা মাত্র, সকল প্রকার ঔষধের ডোজ (খাবারের নিয়ম) রোগির শরীরের গঠন, বয়স, ওজনের ওপরে নির্ভর করে দেয়া হয়, তায় সেবনের পূর্বে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

Post a Comment