টাইফয়েড জ্বর: কারন, লক্ষন ও চিকিৎসা

টাইফয়েড জ্বরের কারন, লক্ষন, রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শুধুমাত্র OshodherKotha.com —এ
Admin
টাইফয়েড জ্বরের কারন, লক্ষন, রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শুধুমাত্র OshodherKotha.com —এ

টাইফয়েড ও প্যারাটাইফয়েড রোগ সালমোনিলা টাইফ ও প্যারাটাইফ- এ দ্বারা মানবদেহে সংক্রামিত হয়। এই জ্বরকে একত্রে আন্ত্রিক জ্বর (Enteric Fever) বলে। আক্রান্ত রোগীর মল-মূত্র দ্বারা বিভিন্ন জায়গায় পানি দুষিত হয় এবং যেভাবেই হউক এই দূষিত পানি মানবদেহে প্রবেশ করিলে রোগের সৃষ্টি হয়। কাঁচা ফল-মূল, পানি, দুধ বা আইসক্রীমের মাধ্যমে ঐ জীবাণু মানবদেহের ক্ষুদ্র অন্ত্রে বাসা বাঁধে এবং ঐ স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। জীবাণুগুলির দেহ হইতে টক্সিন (Toxin) নামক এক প্রকার পদার্থ রক্তে মিশিয়া জ্বরের সৃষ্টি করে।

রোগীর হাত-পা কাঁপে, কাহারও কাহারও পেট খারাপ থাকে, পেট ফাঁপে কিম্বা প্রস্রাব বন্ধ হয় এই অবস্থাকে প্রকৃত টাইফয়েড বলে। প্যারাটাইফয়েড জ্বরে এমন প্রকাশ পায় না কিন্তু প্যারাটাইফয়েডে অনিয়মিত জ্বর উঠে। এই দুইটি রোগের চিকিৎসা একই।

টাইফয়েড জ্বরের লক্ষণ

  1. প্রথম দিন রোগী শরীরে সামান্য ব্যথা অনুভব করে এবং কাজে অস্বস্তি প্রকাশ করবেন।
  2. রোগীর জ্বর ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে।
  3. জ্বর সকালে কমে কিন্তু পূর্বের তুলনায় বেশী হয়। তবে ৩/৪ দিন পরে শরীরের তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রী পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
  4. জিহ্বার মধ্যভাগের পিছনে সাদা দাগ পড়ে, সামনে এবং পার্শ্বে পরিস্কার থাকে এবং লাল হয়।
  5. টাইফয়েডে আক্রান্ত রোগীর পেটের গন্ডগোল বেশী হয়, কিন্তু প্যারাটাইফয়েডে আক্রান্ত রোগীর কোষ্ঠ-কাঠিণ্য বেশী থাকে।
  6. টাইফয়েডে কাহারও কাহারও পাতলা পায়খানা হয়। কিন্তু প্যারাটাইফয়েডে কোষ্ঠকাঠিণ্যে ৪/৫ দিন মলত্যাগ হয় না। আবার ৫/৬ দিন পরে আপনা আপনি মলত্যাগ হয়।
  7. টাইফয়েড বা প্যারাটাইফয়েড জ্বরে চিকিৎসা না করিলে অনেক সময় রোগী কালো পায়খানা করে, রোগী খুব দুর্বল হয় এবং হার্টফেল করার সম্ভাবনা থাকে। ঐ সময় রোগীর অস্থিরতা ভাব, নাড়ী দ্রুত, প্রলাপ, চিৎকার, হাত-পা ঠান্ডা প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

টাইফয়েড রোগ নির্ণয়

  1. Widal Test (ওয়াইডাল টেস্ট) পরীক্ষার মাধ্যমে পরিস্কারভাবে টাইফয়েড রোগ ধরা পড়ে।
  2. সাথে Blood for C/P (Complete Picture) করা ভাল।

টাইফয়েড রোগের চিকিৎসা

  1. শরীরের তাপ বেশী হইলে, মাথা বা অন্যান্য ব্যথার জন্য Paracetamol যুক্ত ঔষধ - Napa, Ace, Renova, Xpa ইত্যাদি।
  2. এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন - Ceftriaxone Sodium যুক্ত ঔষধ - Ceftron, Traxon, Trizon ইত্যাদি।
  3. রোগি অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে গেলে অথবা দুর্বলতা এড়াতে - Normal Saline দিতে হইবে।
  4. আক্রান্ত ব্যক্তির বাথরুম না হলে Glycerin সাপোসিটার পায়ুপথে দিয়ে বাথরুম করাইতে হবে।

টাইফয়েড হলে করনীয়

  1. রোগীকে বিশ্রামে রাখিতে হইবে।
  2. পেটের কোন প্রকার গোলমাল না থাকিলে গ্লুকোজ, পাউরুটি. কমলা ইত্যাদি দেওয়া যায়।
  3. আক্রান্ত রোগীর মাথায় ঠাণ্ডা পানি বা, কপালে পানি পাট্টি দিতে হইবে।
  4. প্রত্যহ কমপক্ষে ১ বার করিয়া লেবুর শরবত বা লেবুর রস খাইতে দিতে হইবে।
সতর্কতা! ইহা একটি নমুনা চিকিৎসা মাত্র, সকল প্রকার ঔষধের ডোজ (খাবারের নিয়ম) রোগির শরীরের গঠন, বয়স, ওজনের ওপরে নির্ভর করে দেয়া হয়, তায় সেবনের পূর্বে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

Post a Comment