![]() |
গোপনাঙ্গ, প্রস্রাবের রাস্তা অথবা যৌনাঙ্গে চুলকানি বলতে যোনি বা গোপাঙ্গ এলাকায় এবং তার আশেপাশে অস্বস্তিকর অনুভূতি বা জ্বালা বোঝায়। এটি লালভাব, ফুলে যাওয়া বা অস্বাভাবিক স্রাব দ্বারা অনুষঙ্গী হতে পারে। যদিও মাঝে মাঝে চুলকানি সাধারণ, ক্রমাগত লক্ষণগুলি একটি অন্তর্নিহিত সমস্যা নির্দেশ করতে পারে যার জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন।
যোনি চুলকানির লক্ষণ
- যোনি এলাকায় এবং তার চারপাশে ক্রমাগত চুলকানি
- লালসা এবং ফুসকুড়ি
- প্রস্রাবের সময় জ্বলন জ্বলন
- অস্বাভাবিক যোনি স্রাব
যোনি চুলকানির কারণ
- ঈস্ট বা ছত্রাকের আক্রমণ: এটি যৌনাঙ্গের চুলকানি বা ইচিং হওয়ার অন্যতম কারণ। সাধারণত Candida Albicans, এই ছত্রাকের কারণে যোনিতে চুলকানি হয়। এই ছত্রাক নরমালি মেয়েদের যৌনাঙ্গে পরজীবী হিসেবে থাকে। কিছু ল্যাকলোব্যাসিলাস নামে উপকারী ব্যাকটেরিয়া এই ছত্রাকের বংশবিস্তারকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। কিন্তু এন্টিবায়োটিক খেলে, গর্ভাবস্থায়, দুশ্চিন্তাগ্রস্থ থাকলে, হরমোনাল ইমব্যালেন্স থাকলে ও খাদ্যাভাসের কারণে এই উপকারী ব্যাকটেরিয়া মরে যায়, ফলে ঈস্টগুলো তাদের জন্মের জন্য অনুকূল পরিবেশ পায়। এর কারণে যোনিতে ইনফেকশন হয়।
- ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিসের সংক্রমণ: এটি ভ্যাজাইনা বা যোনিতে চুলকানি হওয়ার অন্যতম কারণ। যোনিতে নরমালি কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকে। যখন কোন কারণে এই ব্যাকটেরিয়া গুলোর অনেক বেশি বংশবিস্তার ঘটে তখন যোনিতে ইনফেকশন হয়।
- ট্রাইকোমোনিয়াসিস-এর আক্রমণ: এটি একটি প্যারাসাইট। এটির আক্রমণে যোনিতে চুলকানি হয়।
- এছাড়াও যৌনাঙ্গে উকুন, খোসপাচড়া ও মাইকোপ্লাজমা জেনেটালিয়াম এর সংক্রমণ হলে যোনিতে চুলকানি হয়।
- কিছু সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ যেমন – সিফিলিস, গনোরিয়া, এইডস ইত্যাদির কারণে যৌনাঙ্গে ইচিং বা চুলকানি হতে পারে।
- বিভিন্ন বিরক্তিকর পদার্থ যেমন – বিভিন্ন ডিটারজেন্ট, কেমিক্যাল, সুগন্ধিযুক্ত সাবান, রঙ ওয়ালা টিশ্যু পেপার, ফেমিনিন হাইজেনিক স্প্রে, ডুশ ব্যবহার করলে যোনিতে চুলকানি হতে পারে।
- মেনোপোজের পর মহিলাদের ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন কমে যায়। ফলে যোনি শুকিয়ে যায়। এর ফলে বিভিন্ন পরজীবীর সংক্রমণ হয়। ফলে যোনিতে ইচিং হয় ।
- ডায়াবেটিস, রেনাল ডিজিজ, একজিমা ও রক্তে কোন রোগ থাকলে ও অন্যান্য কোন রোগ থাকলেও যৌনাঙ্গে চুলকানি হয়।
- মাসিকের সময় , অস্বাস্থ্যকর প্যাড ও কাপড় ব্যবহার করলে।
- যৌনকর্মীদের এই রোগগুলো বেশি হয়। তাই অবাধ যৌন আচরণের কারণে হয়ে থাকে।
- যৌনাঙ্গ সবসময় গরম ও আর্দ্র রাখলে।
- অপরিষ্কার থাকলে।
যৌনাঙ্গে চুলকানির চিকিৎসা
- চুলকানির জন্য Antihistamine জাতীয় ঔষধ - Alcet অথবা, Deslor অথবা, Artica অথবা, Bilastin ইত্যাদি।
- ক্রিম - Afun অথবা, Clotrim ইত্যাদি।
- কৃমি এর কারনে হয়ে থাকলে, কৃমির ঔষধ - Alben অথবা, Solas ইত্যাদি দিতে হবে।
- যৌনির ভেতরে চুলকনি হলে - Neosten VT অথবা, Afun VT ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে।
- ফাঙ্গাল ইনফেকশন থাকিলে, এন্টিফাঙ্গাল ঔষধ - Fluconazole অথবা, Terbinafine অথবা, Itraconazole ইত্যাদি।
- সেকেন্ডারি ইনফেকশন, ফুলে গেলে এন্টিবায়োটিক - Flucloxacilin জাতীয় ঔষধ খেতে হবে।
যৌনাঙ্গে চুলকানি হলে করনীয়
- রঙীন ও বেশি সুগন্ধিযুক্ত টয়লেট টিস্যু ও সাবান যৌনাঙ্গে ব্যবহার করবেন না।
- ফেমিনিন হাইজিন স্প্রে ও ডুশ ব্যবহার করবেন না।
- ভেজা কাপড় পরে বেশিক্ষণ থাকবেন না। গোসল বা ব্যায়ামের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভেজা কাপড়টি পাল্টে নিবেন। যারা সুইমিং পুলে সাঁতার কাটেন তাদের ক্লোরিনের কারণেও ইচিং হতে পারে , তাই সাবধান হন।
- আপনার যৌনাঙ্গ পরিষ্কার রাখুন সবসময়। বিশেষ করে সহবাসের পর যৌনাঙ্গ ভাল ভাবে পরিষ্কার করুন।
- মাসিকের সময় নোংরা কাপড় ব্যবহার করবেন না। পরিষ্কার প্যাড ব্যবহার করুন।
- একাধিক ব্যক্তির সাথে সহবাস না করা এবং সহবাসের পর প্রস্রাব করুন।
- নিয়মিত গোসল করুন।
সতর্কতা!
ইহা একটি নমুনা চিকিৎসা মাত্র, সকল প্রকার ঔষধের ডোজ (খাবারের নিয়ম) রোগির শরীরের গঠন, বয়স, ওজনে এবং রোগের অবস্থার ওপরে নির্ভর করে দেয়া হয়, তায় সেবনের পূর্বে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।